২০১৮ সালে ব্রাজিলীয় এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা রিয়ো গ্র্যান্ডে রাইজ়ের আশপাশের সমুদ্রতলে গবেষণা চালাতে গিয়ে একটি অদ্ভুত বিষয় লক্ষ করেন। ভূ-ত্বকের নমুনা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে এটি কোনও মালভূমির অংশ নয়।

আটলান্টিক মহাসাগরের ৬৫০ মিটার নীচে নিমজ্জিত আস্ত একটি দ্বীপ। দ্বীপটির নাম রিও গ্র্যান্ডে রাইজ়। রিও গ্র্যান্ডে এলিভেশন বা ব্রোমলি মালভূমি নামেও পরিচিত এটি। ইতিপূর্বে একে মালভূমি বলা হলেও সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় উঠে এসেছে, ব্রাজ়িলের উপকূল থেকে বেশ কিছুটা দূরে দক্ষিণ আটলান্টিক সমুদ্রতলের অংশটি আসলে একটি দ্বীপের ধ্বংসাবশেষ।

২০১৮ সালে ব্রাজিলীয় এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা রিয়ো গ্র্যান্ডে রাইজ়ের আশপাশের সমুদ্রতলে গবেষণা চালাতে গিয়ে একটি অদ্ভুত বিষয় লক্ষ করেন। ভূপৃষ্ঠ থেকে ২ হাজার ফুট নীচে অস্বাভাবিক লাল মাটির স্তরগুলি তাঁদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সেই ভূ-ত্বকের নমুনা পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে এটি কোনও মালভূমির অংশ নয়। বরং ৪০ কোটি বছর আগে আটলান্টিকের বুকে জেগে থাকত এই দ্বীপ।

নতুন তথ্যটির সন্ধান পাওয়ার পর কেটে গিয়েছে সাত বছর। রিয়ো গ্র্যান্ডে রাইজ়ের নাম আবারও বিশ্বব্যাপী মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। কোনও বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের জন্য নয়, বরং ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের দিক থেকে রিয়ো গ্র্যান্ডে রাইজ় নিয়ে বিভিন্ন মহলে চর্চা শুরু হয়েছে।

আরআরএস ডিসকভারি’ এবং আলফা ক্রুসিসে সমুদ্র অভিযানের সময় গবেষকেরা লাল কাদামাটির অস্বাভাবিক স্তরটি দেখে তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন। ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনের সমুদ্রবিজ্ঞান কেন্দ্রের সামুদ্রিক ভূ-তত্ত্ববিদ ব্রামলি মুর্টন সেই অভিযানের সদস্য ছিলেন। তিনি জানান, মাটির নমুনা পরীক্ষা করার পর তাঁরা গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের ভূ-ত্বকের সঙ্গে এর সাদৃশ্য খুঁজে পেয়েছেন।

এই মাটির স্বতন্ত্র খনিজ গঠন শুধুমাত্র গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের তাপ, আর্দ্রতা ও খোলা বাতাসের সংস্পর্শের মাধ্যমে তৈরি হতে পারে। ধারাবাহিক গবেষণাটির সর্বশেষ ঘটনা ইঙ্গিত দেয় যে ব্রাজিলের উপকূল থেকে ১,২০০ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের এই অংশটি কোটি কোটি বছর আগে একটি দ্বীপ ছিল। এই লাল কাদামাটিতে কাওলিনাইট, হেমাটাইট এবং গোয়েথাইট জাতীয় খনিজের হদিস পাওয়া গিয়েছে।
