গোয়ায় পর্যটকদের জন্য কড়া নির্দেশিকা জারি করল সরকার। রাজ্যে বেড়ানোর বিভিন্ন জায়গায় পর্যটকদের উৎপাত রুখতেই এই পদক্ষেপ।

গোয়া ভ্রমণের পরিকল্পনা করেছেন? সতর্ক হোন। খসতে পারে লাখ খানেক টাকা। সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে গেলেই অনেকে জলের ধারে মদ্যপান করেন, যত্রতত্র বোতল ভাঙেন, অথবা সৈকতের উপর গাড়িঘোড়া চালান— যা পরিবেশ ও পর্যটনের জন্য ক্ষতিকারক। এমনই আরও নানাবিধ কার্যকলাপকে বেআইনি ঘোষণা করা হল। গোয়ায় পর্যটকদের জন্য তাই জারি হল কড়া নির্দেশিকা। রাজ্যে বেড়ানোর বিভিন্ন জায়গায় পর্যটকদের উৎপাত রুখতেই এই পদক্ষেপ। আর তার জরিমানা ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে! গোয়ার পর্যটন রক্ষা করা এবং পরিবেশ দূষণ কমানোর জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাই বেড়াতে যাওয়ার আগে জেনে নিন, কোন কোন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে হবে। গত শুক্রবারই গোয়ার বিধানসভায় এই সংক্রান্ত বিল পাশ হয়েছে। এত দিন পর্যটকদের যে নিয়ম মেনে চলত হত, সেই নিয়মকানুনের পরিধিকে আরও বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ, কড়াকড়ি আরও বাড়ল। এখন যেখানে সেখানে মদ খাওয়া বা মদ খেয়ে উৎপাত করা কিংবা যত্রতত্র মদের বোতল ফেললে কড়া শাস্তির মুখে পড়তে হবে পর্যটকদের। এই সংশোধনী বিলে ‘নুইসেন্স’ অর্থাৎ উৎপাত বা অসুবিধাজনক কার্যকলাপ অথবা উচ্ছৃঙ্খলার আওতায় আনা হল আরও নানাবিধ কাজকর্মকে। এই আইনের আওতায় পড়া কার্যকলাপের জন্য শাস্তির পরিমাণ বাড়ানো হল অনেকখানি। তবে শুধু পর্যটকদের জন্যই নয়, হকার এবং স্থানীয় ছোটখাটো ব্যবসায়ীদেরও কড়া নিয়মে বেঁধেছে গোয়ার সরকার।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন— এই ৬ মাসের মধ্যে গোয়ায় পর্যটকের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় প ৫৪.৫ লক্ষ। এঁদের মধ্যে ভারতীয়ের সংখ্যাই ৫১.৮৪ লক্ষ, ২.৭১ লক্ষ পর্যটক আন্তর্জাতিক। স্বাভাবিক ভাবেই এর ফলে পর্যটনের মান রক্ষা করা মুশকিল হয়ে যায়। বিশেষ করে যে এলাকাগুলিতে পর্যটকের ভিড় বেশি হয়, সে সব এলাকায় এই আইন চালু করা হবে।
কোন কোন ধরনের কার্যকলাপকে নিষিদ্ধ বলা হয়েছে, তা এক নজরে এই রকম—
· এমন জলযান ব্যবহার করা, যা বিপজ্জনক এবং যা থেকে দূষণ হতে পারে, তা থেকে পর্যটকদের বিরত থাকতে হবে।
· স্থানীয়দের জন্য বলা হয়েছে, জিনিসপত্র কেনার জন্য পর্যটকদের জোরাজুরি করা যাবেনা।
· ভিক্ষে করা যাবে না।
· অননুমোদিত জায়গায় মদ্যপান বা মদের বোতল ভেঙে রাখা যাবে না।
· নির্দিষ্ট জায়গার বাইরে অথবা খোলা আকাশের নীচে রান্না করা যাবে না।
· রাস্তাঘাট, সৈকত নোংরা করা দণ্ডনীয়।
· জলক্রীড়ার ব্যবসা করাও নিয়ন্ত্রিত থাকবে।
· জিনিসপত্র ফেরি করে বেড়ানোও ক়ড়াকড়ি থাকছে।
· সৈকতে গাড়ি চালানো যাবে না, গাড়িতে চাপিয়ে পর্যটকদের ঘোরানোও যাবে না।
গোয়ার পর্যটনমন্ত্রী রোহন খাউনতে বলেন, ‘‘চতুর্দিকে এজেন্টের ছড়াছড়ি! বেআইনি ভাবে ব্যবসা চলছে। এ সব বন্ধ করতেই এই বিল আনা হয়েছিল।’’
